বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫০ অপরাহ্ন
রামু প্রতিনিধি : রামুর রশিদনগরে বিজ্ঞ আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্তে¡ও প্রবাসীর পরিবারকে জমিতে স্থাপনা নির্মাণে সন্ত্রাসী বাহিনী কর্তৃক গুলিবর্ষণ, হামলা ও ভাংচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার, ২৩ আগস্ট সকাল ১০ টার দিকে রামুর রশিদনগর ইউনিয়নের পানিরছড়া মামুন মিয়ার বাজারে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে রামু থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
রশিদনগর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ নাছিরাপাড়া এলাকার মৃত হাজ¦ী গুরা মিয়ার মেয়ে সামিনা ইয়াসমিন জানিয়েছেন- পানিরছড়া বাজারের পাশর্^বর্তী তাদের স্বত্ত¡দখলীয় জমিতে মঙ্গলবার সকালে ঘেরা-বেড়া ও স্থাপনা নির্মাণ কাজ চলছিলো। কাজ চলাকালে ধলিরছড়া নাছিরাপাড়া এলাকার মৃত আবদুর রহমানের পুত্র আব্দুল গনি ও আবদুল গনির পুত্র রশিদনগর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আবদুল মালেক মাসুমের নেতৃত্বে শতাধিক লোকজন অস্ত্র, লাটি-সোটা নিয়ে তাদের উপর আকষ্মিক হামলা চালায়। হামলাকারিরা তাকে এবং তার পরিবারের সদস্য ও কর্মরত শ্রমিকদের মারধর, বসত ঘর, জমির পাকা সীমানা খুঁটি ও বেড়া ভাংচুর করে। এছাড়াও হামলার আগে সন্ত্রাসীরা বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও সকল সিসি ক্যামেরা ভাংচুর করে। হামলা শেষে মূল্যবান মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। হামলার পর কয়েকরাউন্ড গুলিবর্ষণ করে সটকে পড়ে হামলাকারিরা।
আব্দুল গনি ও তার ছেলে প্যানেল চেয়ারম্যান আবদুল মালেক মাসুম ছাড়াও হামলায় আবদু ছত্তারের পুত্র আবদু রহিম বাট্টু ওয়াজ উদ্দিনের পুত্র জাকের হোছাইন, আবু শামার পুত্র রহিম মিয়া, মোহাম্মদ সিকান্দারের পুত্র জাফর আলম, কাদের মিয়ার পুত্র মোহাম্মদ শফি, মোহাম্মদ সিকান্দারের পুত্র আবু হানিফা, আবদুল হামিদ প্রকাশ হানিফ ডাক্তার (পিতা অজ্ঞাত) আব্দু রহিম প্রকাশ বাট্টুর পুত্র গিয়াস উদ্দিন, খলিলের পুত্র শাহজাহান, মৃত মোজাহের এর পুত্র মিজানুর রহমান, আমির হোসেনের পুত্র মোক্তার আহম্মদ, খলিল আহম্মদের পুত্র শাহ আলম, আব্দু সালাম (পিতা অজ্ঞাত) শতাধিক ভাড়াটে সন্ত্রাসী অংশ নেয়।
হামলাকার শিকার সামিনা ইয়াসমিন আরো জানিয়েছেন- তার প্রবাসী ভাই গিয়াস উদ্দিন ২০২০ সালের ১৫ ডিসেম্বর ২৪৪২ নং কবলামূলে সাড়ে ৮ কড়া জমি ক্রয় করে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখল করে আসছেন। কিন্তু হামলাকারি ভূমিগ্রাসী চক্রটি প্রভাবশালী, ক্ষমতাবান হওয়ায় প্রভাব বিস্তার করে দীর্ঘদিন জমিটি জবরদখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছে। এমনকি তার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা চাঁদাও দাবি করে আসছে। চাঁদা না দিয়ে এখানে জমি থেকে তাদের উচ্ছেদ সহ প্রাণনাশের হুমকী দিয়ে আসছে।
এনিয়ে তিনি (সামিনা) কক্সবাজার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এমআর মামলা (নং ২২২২/২০২১) দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত এ মামলায় গত ১ আগস্ট আবদুল গনি গংকে প্রবেশে বারিত করে। অথচ বিজ্ঞ আদালতের এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চক্রটি তাদের মারধর, জমিতে হামলা ও ভাংচুর চালিয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে তারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং আবারও প্রাণনাশের চেষ্টা সহ সন্ত্রাসী হামলার আশংকা করছেন।
ঘটনাস্থলে আসার রামু থানার এসআই শাহাদাৎ জানিয়েছেন- সামিনা ইয়াসমিনের দায়েরকৃত এমআর মামলায় বিজ্ঞ আদালত ২য় পক্ষকে বারিত করে নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু সেখানে জমি অনেক রয়েছে। কোন জমি তা নির্দিষ্ট করে দেয়নি। যারফলে এ বিরোধের সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আরো জানান- পুলিশ দ্রæত প্রদক্ষেপ নেয়ার এ ঘটনায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ সজাগ রয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত রশিদনগর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আবদুল মালেক মাসুম জানিয়েছেন- আদালত মাত্র সাড়ে ৪ কড়া জমিতে বারিত করার আদেশ দিয়েছেন। কিন্তু এখানে জমি আছে বেশী। অতিরিক্ত জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করায় বাঁধা দেয়া হয়েছে। তিনি হামলা ও ভাংচুরের বিষয়টি অস্বীকার করেন।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply